শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাবা দিবস

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বটগাছ, সাহসের বাতিঘর

সুলতান মাহমুদ বান্না
২১ জুন ২০২০

বাবা! তুমিও বাবা, আমিও বাবা। তবে আমি কেমন বাবা? সেটা আমি এখন অনুভব করি। বাবা হিসেবে তোমার কোন তুলনা নেই। তোমার ধারে-কাছে আমি কিছুই নই। আমার বধোদয়ের এই মাত্রাটাই আসল। আমি তোমার সন্তান ও নিজের সন্তানের বাবা হিসেবে এই পরিবার, সমাজ ও পৃথিবীটাকে বুঝার চেষ্টা করি।

আজ বিশ্ব বাবা দিবস। তোমাকে অনুভব করতে, তোমাকে স্মরণ করতে মাঝে মধ্যেই ভুলে যাই। এই দিবসের কল্যাণে ক্ষণিকের জন্য হলেও একটু লেখার মাধ্যমে তোমার জন্য বিশেষ কিছু সময় ব্যয় করতে পেরে ভালোই লাগছে। জীবিকার তাগিদে আজ ২৭৮ কিলোমিটার দূরে বসে তোমার কথাই ভাবছি। অনেকদিন হলো তোমার স্নেহের ছোঁয়া নেই। দিবা-রাত্রি তোমার স্নেহমাখা কন্ঠের ডাকাডাকি নেই। সন্তানের মঙ্গলের জন্য বাবার আদর মাখা ধমকটিও আজ অধরা। 

তোমাকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে পারি না। তোমাকে বিরক্ত করা হয় না। তোমার কাছে বসে গল্প শোনাও হয় না। তোমার শরীরের উঞ্চতাও অনুভব করতে পারি না। ভাবতেই পারি না। কিসের এতো দূরত্ব? বুঝিনা! জীবন ও জীবিকার তাড়নায় পারিবারিক বন্ধন আজ সময়ের কাঁটাতারে বাধা। ডিজিটাল বন্ধনে সেই রূপ দেওয়ার চেষ্টা করলেও আসলে তা শুধু কল্পনার জগতেই বসবাস।

অদ্যাবধিও তোমার আদর, তোমার ভালোবাসা, তোমার চিন্তা, তোমার হাসি, তোমার কান্না, তোমার আনন্দ, তোমার কষ্ট দেখতে পাই। তোমার পরশেই আজ আমার এই অস্তিত্ব। তোমার পরিচয়েই আজ আমার পরিচয়। তোমার পরামর্শেই আজ আমার পথচলা। তোমার সাহসেই আমার সাহস। তোমার প্রেরণাই আমার ভবিষ্যত। আমার জীবনের সকল পরীক্ষাতেই আমাকে সাহস জুগিয়েছো। সকল বিপদে-আপদে তোমার ছায়া সবসময়ই আমি পাই। আমার সফলতায় তোমার চোখে আনন্দাশ্রু দেখেছি।

বাবা, আমার এই ছোট্ট জীবনে তোমাকে অনেক চ্যালেঞ্জ নিতে দেখেছি। পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় তা দেখার সৌভাগ্যটা আমার হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ দেখার মাধ্যমে নিজের সামনের পথ চলাও আজ সহজ হয়েছে। তোমার স্কুল, কলেজ, পেশাগত, সাংসারিক ও রাজনৈতিক জীবনের গল্পগুলো আজো আমাকে সাহজ জোগায়। তুমি তোমার জীবনের কতো ঝড়, কত ঝঞ্ঝাটের মধ্যেও কঠোর পরিশ্রম, দৃঢ় মনোবলের মাধ্যমেই এগিয়ে গেছো। বাবা নামক প্রতিষ্ঠানের ধৈর্য তোমার মাঝে দেখেছি। সেটা যেন একটি রূপকথার গল্প। আজো সুস্থ্য শরীর ও মনোবল নিয়ে

রাজনীতির মাঠে ও সামাজিক কাজে এখনও তুমি যেভাবে ছুটে চলো। এ যেন আমার দেখা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বটগাছ, সাহসের বাতিঘর। 

বাবা! তোমার তুলনা তুমিই। বাবা, দূর হতে তোমার জন্য কী করতে পারি। শুধু আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে দু’চোখের অশ্রু সংবরণ করে দোয়া করা ছাড়া। আমি জানি বাবারা ক্ষমা করতে পারে। তুমি তোমার এ ছেলেকে ক্ষমা করে দিও। তুমিও আমার বাবা, আমিও তোমার বাবা! এটাই আমার শান্তি, এটাই আমার প্রাপ্তি।

লেখক : আইনজীবী, সুপ্রীমকোর্ট।

সুবর্ণচরে ভাঙা রাস্তা সংস্কার করল ছাত্রলীগ
মাতৃদুগ্ধ পানের সময়সীমা: ইসলামি দৃষ্টিকোণ

আপনার মতামত লিখুন